
আবহাওয়া পরিবর্তনের পাশাপাশি মিষ্টি শীতল হাওয়া মানুষকে মনে করিয়ে দিচ্ছে ঋতুর পরিক্রমায় শীত শুরু হয়েছে। শহর-গঞ্জে এখন চলছে শীতের আমেজ। তাই ক্রেতারা খোঁজ শুরু করেছেন লেপ-কম্বলের। নতুন লেপ-কম্বল যেমন কেনা হচ্ছে, তেমনি পুরোনো লেপ নতুন করে বানিয়েও নিচ্ছেন অনেকে। লেপ-কম্বল বিক্রির দোকানগুলোতে ও তৈরীর স্থানগুলোতে এমনি দৃশ্য এখন নিত্যদিনের।
কালের আবর্তে মোটা কাথা ও নকশী কাথার কদর কমলেও ঐতিহাসিক আর ঐতিহ্যের তুলো-রুইয়ের তৈরী লেপের কদর কমেনি বিন্দুমাত্র। উল্টো শীতে উষ্ণতা ছড়াতে লেপ ও কম্বলের জুড়ি নেই বলেই মনে করে সাধারণ মানুষ। প্রাচীনকাল থেকেই এর ব্যবহার হয়ে আসছে।
জানা যায়, শীতের আগমনী বার্তায় ব্যস্ততা বেড়েছে বিভিন্ন লেপ-তোষক তৈরির কারিগরদের এবং লেপ কম্বলের রেডিমেড দোকানে। শীত জেকে বসার আগে তাই লেপ-তোষক তৈরির ধুম লেগেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। ফলে লেপ-তোষকের দোকানে বাড়ছে বেচা-কেনা। এসব দোকানের কর্মচারীদের এখন অলস সময় কাটানোর একদম ফুরসত নেই।
নগরীর কালিরবাজার পোষ্ট অফিসের সামনের ফুটপাতে ২০-২৫টি লেপ-তোষক বিক্রি ও প্রস্তুতের দোকান রয়েছে। প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ চলছে প্রতিটি দোকানে। লেপ প্রস্তুত করার এসব দোকানগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে বিক্রেতাদের ভীড় লক্ষ্য করা গেছে। ছোট বড় বিভিন্ন মাপের লেপ-কম্বল কিনতে এসেছেন ক্রেতারা। অনেকে আবার পুরোনো লেপ ভেঙ্গে নতুন করে বানিয়েও নিচ্ছেন। এসব দোকানগুলোতে প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০টি লেপ বিক্রি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দোকানদাররা।
তবে কারিগরদের অনেকের অভিযোগ ব্যস্ততা বাড়লেও দোকান মালিকরা তাদের ন্যয্য মজুরি দেন না। সব কিছুতেই মজুরি ও পারিশ্রমিক বাড়লেও তাদের পারিশ্রমিক বাড়েনি। আর দোকান মালিকরা বলছেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে কাপড় ও তুলার দাম। প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে তাকতে অল্প লাভে তাদের ব্যবসায় করতে হয়। তাই অনেক সময় কারিগরদের মজুরি কিছুটা কম দেওয়া হয়।
লেপ-তোষক ব্যবসায়ী মো. জুবেদ খান জানান, স্বাধীণতার পর থেকেই এখানে লেপ-তোষক তৈরী ও বিক্রি করি। প্রতি বছরই শীত বাড়ার সাথে সাথে কাজের পরিমাণ বাড়ে তবে শীতের শুরুতে কাজের চাপ কিছুটা বেশি থাকে। তিনি আরও বলেন, লেপ তৈরিতে কার্পাস তুলাই বেশি ব্যবহার হয়। রকমভেদে প্রতি কেজি কার্পাস তুলার দাম ১৫০ থেকে ৫০০ টাকা। লেপ সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে। সিঙ্গেল, সেমি ডবল ও ডবল। প্রতিটি সিঙ্গেল লেপ ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, সেমি ডবল ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং ডবল আকারের লেপ বানাতে ১ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ পড়ে। পুরোনো লেপ নতুন করে বানাতে প্রায় অর্ধেক খরচ হয়। লেপের কভারের দাম ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা।