৯ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার, রাত ১০:৫৮

জেলা আওয়ামীলীগের অর্ধ ডজন পদ শূন্য

প্রাইমনারায়ণগঞ্জ.কম

৩১ মাস সময় পেরিয়ে গেলেও পূরণ হয় নি জেলা আওয়ামীলীগের অর্ধ ডজন শূন্য পদ। জেলা কমিটির শূণ্য এসব পদ কবে নাগাদ পূরণ হচ্ছে তাও বলতে পারছেন না কেউই।  উত্তর ও দক্ষিণ মেরুতে দ্বন্দ্বের কারনেই তা সম্ভব হয়নি বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে তা প্রকাশ্যে স্বীকার করছে না দায়িত্ববান নেতারা।

জানা যায়, জেলা কমিটির সহ সভাপতি, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ১ জন করে ও ২ জন সদস্য পদসহ মোট ৬টি পদ শূণ্য রয়েছে। এছাড়া কমিটি ঘোষণার পূর্বেই সহ সভাপতি পদে থাকা খাজা রহমতউল্লাহর মৃত্যুতে আরো একটি পদ খালি হয়।

সাধারণ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, বর্তমান কমিটি অনুমোদন পাওয়ার পর গত ৩১ মাসে ৬ শূণ্য পদ পূরণ তো দুরে থাক, চোখে লাগার মতো কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিলো না এ কমিটির। জেলার শীর্ষ নেতৃবৃন্দের মধ্যে সমন্বয়হীনতার অভাব ও দুই মেরুর দ্বন্দের কারণে গুরুত্বপূর্ণ এ ৬টি পদ পূরণ করা ছাড়াই দীর্ঘ সময় পার করেছ তারা। বর্তমান কমিটি অনুমোদন পাওয়ার পর একসাথে দাড়িয়ে কোনো অনুষ্ঠান বা কর্মসূচী পালন করতে পারে নি। ফলে অনেকটা হ-য-ব-র-ল অবস্থা জেলা আওয়ামী লীগে।

দলীয় সূত্রমতে, স্বাধীণতা পরবর্তী সময় থেকেই নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ এ দুটি মেরুতে বিভক্ত। যার দক্ষিণে ওসমান পরিবার, উত্তরে চুনকা পরিবার নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। একইসাথে নারায়ণগঞ্জবাসীর অহংকার পাট ও বস্ত্র মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর বীর প্রতীক উত্তর মেরুতে যুক্ত হওয়ার উত্তর মেরুর শক্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে দলীয় হাইকমান্ড ২০১৬ সালের ৯ই অক্টোবর বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল হাইকে সভাপতি, নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সহ-সভাপতি ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ বাদল ওরফে ভিপি বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা দেন। এর ১৩ মাস পর ২০১৭ সালের ২৫ শে নভেম্বর ৬টি পদ শূন্য রেখে ৭৪ সদস্যবিশিষ্ট জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। এতে নড়েচড়ে বসে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন হওয়ার পরও দুই ধারায় বিভক্ত হয়ে যান কমিটির সদস্যরা। ফলে শূন্য ৬টি পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে দলীয় সভায় চরম হৈচৈ ও মত পার্থক্যের কারণে পদগুলো এখনো পূরণ করা সম্ভব হয়নি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েকজন জেলা ও থানা পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতা জানান, টানা তৃতীয়বারের মতো দল ক্ষমতায়। অথচ দলের সাংগঠনিক অবস্থা বেহাল। মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে আছে উপজেলা ও থানা কমিটিগুলো। তাছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির মেয়াদও শেষের দিকে। কিন্তু পূরণ হলো না শূণ্য থাকা ৬ পদ।

এ বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, করোনা পরিস্থিতি থেকে স্বাভাবিক অবস্থায় যাওয়ার পর পদগুলো পূরণ করা হবে। আমাদের কমিটির মেয়াদ এখনো শেষ হয় নি, হবে ডিসেম্বরে। তবে মহানগর কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে।

জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আরজু ভুইয়া বলেন, আমাদের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে কথাটা ঠিক না। এমন অনেক কমিটিই আছে যেগুলো বছরের পর বছর থাকে। যেমন মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটিও প্রায় ৭ বছর আগে শেষ হয়ে গেছে। আর ৬টি পদ তেমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদ নয়, এগুলো ছাড়াও চলে। তবে হয়তো সবাই ঐক্য মতে পৌছাতে না পারায় পূরণ করা যায় নি। শীঘ্রই পূরণ করা হবে।

জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল কাদির বলেন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বার্থের কারণে এখনো পদগুলো পূরণ হয়নি। তারা তাদের বেনিফিট এর জন্য পদগুলো পূরণ করেন নি।

জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এ বিষয়ে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ভালো বলতে পারবে কেন শূণ্য পদগুলো পূরণ করা হয়নি। তবে আমি বলতে চাই এটা তাদের ব্যর্থতা।

জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল পারভেজ বলেন, আমাদের শূণ্য পদগুলো পূরণ একটি প্রক্রিয়াধীণ বিষয়। আর শুধু আমাদের এখানেই দেশের অনেক জেলায় এমনকি কেন্দ্রেও অনেকসময় পদ শূণ্য থাকে। তবে পরিস্থিতি ভালো হলেই আমরা এগুলো পূরণ করবো।

জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড: আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদলের মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়ায় কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ অধ্যাপক ডা: আবু জাফর চৌধুরী বিরু কল রিসিভ করেন নি।

আরও পড়ুন:

বাছাইকৃত সংবাদ

No posts found.