৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, রাত ১০:২৩

উকিলপাড়া-গলাচিপা রেলের জমি ফের অবৈধ দখল

প্রাইমনারায়ণগঞ্জ.কম

প্রাইম নারায়ণগঞ্জ:

উচ্ছেদের তেরো মাসের মাথায় আবার দখল হয়ে গেছে নগরীর উকিলপাড়া ও গলাচিপায় রেলওয়ের জমি। স্থানীয় এক কাউন্সিলরের মদদে পুরানো দখলদাররাই নতুন করে ওই জমিতে গড়ে তুলছেন লোহা ও টিনশেডের দোকানঘর। এসব ঘরে খুলে বসেছেন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। প্রায় ৩০ বছর বেদখলে থাকা রেলের এই জমি ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে উদ্ধার করে রেলওয়ের এষ্টেট বিভাগ। সে সময় ওই জমিতে অবৈধ ভাবে গড়ে উঠা প্রায় পাঁচ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়েছিল।

তবে উচ্ছেদের কয়েক মাস পর থেকেই দখলদাররা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যানার লাগিয়ে নিজ নিজ জায়গা দখল করে রাখেন। এর কয়েক মাস পর শুরু করেন টং দোকান-ঘর নির্মাণ। বর্তমানে এই জমিতে লোহা ও টিনশেডের প্রায় শতাধিক দোকান ঘর তৈরী করা হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উকিলপাড়ায় ভেঙ্গে ফেলা সাবেক মহিউদ্দিন ক্লাবের দুই পাশে প্রায় ৫০টি লোহার দোকান ঘর নির্মাণ করে ভাড়া দেয়া হয়েছে। যার প্রতিটি দোকান ঘর ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা সালামি (অগ্রিম) ও মাসে ৬ থেকে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া দেয়া হয়েছে। এছাড়াও দুই পাশে আরো প্রায় ৫০ থেকে ৬০ টি দোকান ঘর নির্মাণের কাজ চলছে। ঘর তৈরীর জন্য এনে রাখা হয়েছে বেশ কিছু লোহার স্ট্রাকচার (কাঠামো)।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দোকানী জানায়, স্থানীয় কাউন্সিলর সফিউদ্দিন প্রধানের নির্দেশে তার লোকজন হিসাবে পরিচিত আকতার ভাই, শুক্কুর ভাই সহ আরো কিছু বড় ভাইয়েরা দোকানগুলো নির্মাণ করে ভাড়া দিচ্ছে।

এদিকে স্থানীয়রা বলেন, স্থানীয় কাউন্সিলরের ভাইয়ের নামে এখানে আগে একটি ক্লাব ছিলো এবং এ এলাকাটিও কাউন্সিলর সফিউদ্দিনের ওয়ার্ডের আওতাধীন। তাছাড়া তিনি সরকারী দলের একজন প্রভাবশালী নেতা হিসাবেই সর্বমহলে পরিচিত। তার মদদ ছাড়া তারই ওয়ার্ডে এ ধরনের দু:সাহস কেউ দেখাতে পারে বলেও মনে করে না স্থানীয়রা।

একই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে সেই আকতার প্রাইম নারায়ণগঞ্জকে বলেন, এ দোকানগুলো ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা নিজেরাই তুলেছেন। আমি নিজেও একজন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী। আমরা লোহার স্ট্রাকচার দিয়ে ঘরগুলো তুলেছি, যাতে করে রেলওয়ে চাইলে সহজেই এগুলো সরিয়ে নেয়া যায়।

এ দোকান ঘরগুলো কারো কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে তুলেছেন কিনা জানতে চাইলে আকতার বলেন, কারো কাছ থেকে অনুমতি নেই নি। আমরা নিজেরাই তথা আমি আকতার, মোহাম্মদ, আরিফ, শরিফ আমরাই এগুলো করছি।

এ বিষয়ে অসংখ্যবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও মহিলা কাউন্সিলর শারমিন হাবিব বিন্নী ও ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সফিউদ্দিন প্রধান কল রিসিভ করেন নি।

ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মনির হোসেন বলেন, না না ২নং রেল গেট থেকে নয়, উকিলপাড়া থেকে গলাচিপায় বসানো হচ্ছে। কারা বসাচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সফিরে (কাউন্সিলর সফিউদ্দিন) জিজ্ঞাসা করেন। সফি (কাউন্সিলর সফিউদ্দিন)’র লোকজন। পরক্ষণেই তিনি সুর পাল্টে বলেন, না না আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। তিনি আরও বলেন, এটা নিয়ে স্থানীয় একটি পত্রিকায় তো নিউজও হয়েছে। আপনি সেটা দেখলেই জানতে পারবেন।

এদিকে, নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাষ্টার গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ডাবল রেল লাইন করার জন্য গত বছরই অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হয়। কিন্তু বর্তমানে স্থানীয়রা আবার দখল করছে। ডাবল রেল লাইনের প্রজেক্ট যাদের দেয়া হয়েছে তারাই আবার উচ্ছেদ করবে। তবে আমি আমার উপরস্থ কর্মকর্তাদের বিষয়টি সম্পর্কে জানাবো।

বাছাইকৃত সংবাদ

No posts found.