
নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে সরকারি সড়ক দখল করে মোড়ে মোড়ে অবৈধ সিএনজি স্ট্যান্ড গড়ে উঠেছে। নগরীর দুই নং রেল গেইট, মন্ডলপাড়া-জিমখানা, গলাচিপা, নিতাইগঞ্জ সহ নগরীর সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দরে বেশ কয়েকটি অবৈধ অটোস্ট্যান্ড এখন নগরবাসীর বিষফোঁড়ায় পরিণত হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি মোড়েই দুই লেনের সড়কের দুই পাশেই একাধিক সারিতে অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। এর পর সড়কের অবশিষ্ট যে অংশটুকু থাকে তাতে কোনো মতে এক সারিতে যান চালাচল করতে পারে। তাতেও অটোরিকশা চালকদের দৌরাত্ম্য। রাস্তার মাঝখানে অটোরিকশা থামিয়ে নিজেদের মধ্যে আলাপ সেরে নেওয়া, যাত্রী ওঠানো-নামানোর কাজ অবলীলায় করে তারা। থোড়াই কেয়ার করে মানুষের ভোগান্তির কথা।
ওই মোড়গুলোতে অবৈধ স্ট্যান্ড হওয়ায় অনেক সময় পায়ে হাঁটাও দুষ্কর হয়ে পড়ে। বিশেষ করে সড়ক পার হওয়ার সময় বিপদে পড়ে বৃদ্ধসহ সকল শ্রেণী-পেশার কর্মজীবি মানুষজন।
এদিকে এসব মোড়ে মোড়ে অবৈধ ইজিবাইক ও অটোরিক্সা থেকে কিছু অসাধু ব্যক্তির পকেটে চাঁদার টাকা যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। নগরের ২ নং রেল গেইট, মন্ডলপাড়া-জিমখানা, গলাচিপা, নিতাইগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় এ স্ট্যান্ডের দেখা মিলবে। এভাবে রাস্তা দখল করে স্ট্যান্ড বানিয়ে বছরের পর বছর ধরে তারা দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
নগরের কোনো সড়ক সম্প্রসারণ হলে যেন অটোরিকশা ওয়ালাদেরই পোয়াবারো। ইচ্ছেমতো অস্থায়ী স্ট্যান্ড বানিয়ে নেওয়া যায়। যার সবচেয়ে উৎকৃষ্ট উদাহরণ নগরের ২ নং রেল গেইট এলাকা। এখানে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত যত্রতত্র অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে, চলতি রাস্তায় দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলাসহ চালকদের দৌরাত্ম্যে সারা দিনই বিশৃঙ্খলার কারণে সড়কে জনসাধারণকে ভোগান্তি পোহাতে হয়।
নগরীর ২ নং রেল গেইটের রহমতউল্লাহ ইন্সটিটিউটের সামনে ২নং রেল গেইট টু দেওভাগ মাদ্রাসা, ভোলাইল রোডের অটোরিকশা স্ট্যান্ড। এ রোডের অটোগুলো সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সড়কের দুই পাশে দাড়িয়ে থেকে যানজটের সৃষ্টি করে। এ স্ট্যান্ডের ঠিক উল্টো দিকেই ফজল আলী ট্রেড সেন্টারের সামনে ২ নং রেল গেইট টু সৈয়দপুর, কড়ইতলা, ফকিরবাড়ি, মুক্তারপুর, মুন্সিগঞ্জগামী অটোরিক্সা, সিএনজির অবৈধ স্ট্যান্ড। একই অবস্থা এ রোডের অটোরিকশা স্ট্যান্ডেরও।
জিমখানা এলাকায় জিমখানা টু ডিক্রিরচর, কাশিপুর, বাংলাবাজার, গোপচর রুটের অবৈধ স্ট্যান্ড দীর্ঘদিন যাবৎ চলছে। সিটি কর্পোরেশনের পাশেই নিতাইগঞ্জেরে মুখে নিতাইগঞ্জ টু সৈয়দপুর, শহীদনগর, মুক্তারপুর গামী অবৈধ অটোস্ট্যান্ডেও চোখে পড়ে একইচিত্র। এসব স্ট্যান্ডের চালকরা কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে রাখে অটোরিকশা। কখনো কখনো রাস্তার অর্ধেক দখল করে দুই সারি দাঁড় করিয়ে রাখতে দেখা যায়। এই স্ট্যান্ডগুলো ছাড়াও বিবি রোডের দিগু বাবুর বাজারের সামনে প্রতিদিন সকালে শতাধিক অটোরিকশা সারিতে সারিতে দাঁড় করিয়ে রাখে চালকরা। যত্রতত্র স্ট্যান্ডের পাশাপাশি অটোরিকশা চালকদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ এসব এলাকার ব্যবসায়ীরাও।
গলাচিপা রোডের মুদি ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘পুরো গলাচিপা এলাকাটাই যেন সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ড। দোকানের সামনে, রাস্তায় যেখানে খুশি তারা অটোরিকশা দাঁড় করিয়ে রাখে। কিছু বলতে গেলে তেড়ে আসে। তাদের যন্ত্রণায় ব্যবসা চালানো দুষ্কর হয়ে পড়ে।’ একই অভিযোগ নগরের ২নং রেল গেইট, নিতাইগঞ্জ রোডের ব্যবসায়ীদের।
নগরের দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা রাজ্জাক মিয়া বলেন, ‘নগরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে গড়ে উঠেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড। তারা নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো অটোরিকশা দাঁড় করাচ্ছে। কেউ তাদের অটোরিকশা সরাতে বললে দুর্ব্যবহার করে। এ নিয়ে প্রায়ই বাগিবতণ্ডা থেকে শুরু করে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।
বিআরটিএ, জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং নগর কর্তৃপক্ষ এর দায় কোনোভাবে এড়াতে পারে না বলে মনে করেন নগরবাসীরা। নগরবাসীরা বলেন, ‘হাজার হাজার অটোরিকশা রাস্তায় চলছে। কোনো পরিকল্পনা না থাকায় ভবিষ্যৎ চিন্তা না করেই এসব অটোরিকশা নিয়ে মাথাব্যথা নেই কারো।
আরও পড়ুন: অটো , অবৈধ , নারায়ণগঞ্জবাসীকে
No posts found.