
# এটা নিয়ে আপনাদের এতো প্রশ্ন কেন, এটাতো পার্টি বুঝবে: আব্দুল হাই
# গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বাংলাদেশের সবগুলো কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে : খোকন সাহা
প্রাইম নারায়ণগঞ্জ:
গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের জেলা-মহানগর শাখার কমিটির মেয়াদ তিন বছর হলেও মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়েই চলছে রাজনীতির সুতিকাগার হিসাবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের কার্যক্রম। জেলা আওয়ামীলীগের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত মাসে আর মহানগর আওয়ামীলীগ চলছে পাঁচ বছর আগের পুরোনো কমিটি দিয়ে। ফলে দলের ভেতরে নেতাকর্মীদের মধ্যে শীঘ্রই সম্মেলনের দাবী উঠেছে বলে জানা যায়।
জেলা পর্যায়ের দলীয় কর্মীরা জানান, ২০১৬ সালের ৯ই অক্টোবর আব্দুল হাইকে সভাপতি, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে সহ-সভাপতি ও ভিপি বাদলকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় হাইকমান্ড। এর ১৩ মাস পর ২০১৭ সালের ২৫ শে নভেম্বর ৭১ সদস্য পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্র।
মহানগরের নেতাকর্মীরা জানায়, ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ৭১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে ২০১৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আনোয়ার হোসেনকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট খোকন সাহাকে সাধারণ সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিল।
জেলার বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের মতে, হাই-বাদলের নেতৃত্বে গঠিত জেলা আ.লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রথমদিকে বেশ প্রশংসা কুড়ালেও কিছুদিন পর থেকেই নেতৃবৃন্দের মাঝে শুরু হয় দ্বন্দ ও কোন্দল। প্রথমে ৬ শূণ্য পদ নিয়ে, পরবর্তীতে সোনারগায়ে ত্যাগীদের বাদ দিয়ে বিতর্কিত আহবায়ক কমিটি গঠন, পরবর্তীতে জেলা আ.লীগে দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ায় দুটি পক্ষ পাল্টাপাল্টিভাবে কেন্দ্রে অভিযোগ, সম্প্রতি জাহাঙ্গীরকে বহিস্কারসহ বেশ কিছু ইস্যুতে বিতর্কিত হয়ে পড়ে এ কমিটি। তাছাড়া, দীর্ঘ তিন বছরেও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার নতুন কমিটি গঠনসহ জেলার আওতাধীণ বেশ কয়েকটি শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনেও ব্যর্থতার পরিচয় দেয় তারা।
অপরদিকে, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে একই কমিটি থাকলেও মহানগরের ২৭ টি ওয়ার্ডের কমিটি গঠন করতে পারে নি আনোয়ার-খোকনের নেতৃত্বাধীন মহানগর আওয়ামীলীগ। একইসাথে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দও ছিলো চোখে পড়ার মতো। দলের সাধারণ সম্পাদক একবার আনোয়ার হোসেনের সাথে, আবার সাংসদ শামীম ওসমানের সাথে থেকে বিভিন্ন সভা-সমাবেশে অংশগ্রহন করতে থাকেন। তাছাড়া দৃশ্যমান দুটি বলয় ছিলো মহানগর আওয়ামীলীগে। একটি বলয়ে সভাপতি আনোয়ার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক আহসান হাবিব, জি এম আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক জি এম আরাফাত, মাহমুদা মালাসহ বেশ কয়েকজন অপরটিতে সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহা, যুগ্ম সম্পাদক শাহ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল সহ বেশ কয়েকজন রয়েছে বলে জানা যায়।
থানা, উপজেলা, ওয়ার্ড, ইউনিয়ন কমিটির পদপ্রত্যাশী কয়েকজন নাম প্রকাশ না করে বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন শাখাগুলোর নতুন কমিটি না হওয়ায় মিছিল-মিটিংসহ সাংগঠনিক কার্যক্রমে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে। যেসব শাখা কমিটি হয়নি সেসব শাখা আ.লীগের পদপ্রত্যাশী যারা দীর্ঘদিন থেকে পরিশ্রম ও সময় দিলেও কোনো ফল পাচ্ছেন না। তাই তারা শীঘ্রই সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন জেলা –মহানগর কমিটির দাবীও জানান।
কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে কিনা জানতে যোগাযোগ করা হলে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই বলেন, মেয়াদ অবশ্য আছে, শেষ হয় না। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর মেয়াদ থাকে জানালে তিনি বলেন, গঠনতন্ত্রে লেখা আছে, কিন্তু তিন বছর পর পর কোনো জেলায় এরকম নতুন কমিটি করতে পারছে না, তাছাড়া মহানগরও তো সাত বছর ধরে একই কমিটি বহাল আছে। করোনার কারণে সবকিছুই একটু শিথিল ছিলো সেক্ষেত্রে কিছুটা সময় আমরা পাবো। তিনি আরো বলেন, কেন এটা নিয়ে আপনাদের এতো প্রশ্ন কেন, এটা তো আমাদের পার্টি বুঝবে।
একই বিষয়ে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বাংলাদেশের সবগুলো কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, শুধু আমাদের টা নয়। আমরা করোনাকালীণ সময়ে সম্মেলন করতে পারি নি, করোনা শেষ হয়ে গেলে নির্দেশনা আসলেই আমরা সম্মেলন করে ফেলবো। কখন কমিটি করবো না করবো সেন্ট্রাল আমাদের এমন নির্দেশনা দিলেই আমরা কমিটি করবো।
No posts found.