৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, রাত ১০:৫১

ব্যর্থতার দ্বায় কাধে নিয়ে চলছে নেতারা

প্রাইমনারায়ণগঞ্জ.কম

প্রাইম নারায়ণগঞ্জ:

দেশের অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জেলা ও মহানগর কমিটির মেয়াদ থাকে তিন বছর। সেই হিসাবে জেলা আ.লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হবে ১৮ দিন পর, মহানগর কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে আরো ২ বছর আগে। দুটি কমিটির মধ্যে একটি ৩ বছর ও একটি সাত বছর সময় পার করলেও আওয়ামী নেতাকর্মীদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ-কোন্দল ও বিরোধ নিরসনে ব্যর্থ হয়েছে নেতারা এমনটাই মনে করে রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল। তাদের মতে, ব্যর্থতার দ্বায়ভার কাধে নিয়েই চলছে নেতৃবৃন্দরা।

দলীয় সুত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৯ই অক্টোবর জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণার ১৩ মাস পর ২০১৭ সালের ২৫ শে নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়। যার মেয়াদ আছে আর ১৮ দিন। এ কমিটিতে সভাপতি হিসাবে রয়েছেন বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ আব্দুল হাই, সহ-সভাপতি হিসাবে রয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান বাচ্চু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল কাদির, আরজু ভুইয়া, যুগ্ম সম্পাদক হিসাবে আছেন জাহাঙ্গীর হোসেন। এছাড়াও এমন আরো বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা এ কমিটিতে আছেন বলে জানা যায়।

অপরদিকে, ২০১৫ সালের ২৬ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের ৭১সদস্য বিশিষ্ট পূর্নাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে ২ বছর আগে। এ কমিটিতে সভাপতি পদে বহাল আছেন সাংসদ সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের রাজনৈতিক গুরু এবং মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর চাচা খ্যাত বর্ষিয়ান আরেক রাজনীতিবীদ আনোয়ার হোসেন। এছাড়া সহ-সভাপতি পদে আদিনাথ বসু, রোকনউদ্দিন আহম্মেদ সহ আরো অনেকে রয়েছেন বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে।

তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতে, জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের কমিটি দুটিতে বেশ আব্দুল হাই ও আনোয়ার হোসেনসহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা রয়েছেন যারা মন থেকে চাইলেই দ্বলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ-কোন্দলের অবসান করতে পারতেন। পারতেন উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর দীর্ঘদিনের দূরত্ব দুর করে দিয়ে উভয় মেরুর নেতৃবৃন্দ ও তাদের সমর্থকদের এক কাতারে দাড় করাতে। কিন্তু এক্ষেত্রে তারা চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে বলেও মনে করেন তৃণমূলের এসব নেতাকর্মীরা। তাদের মতে, সৎ ইচ্ছা থাকলে সবই সম্ভব হতো। তবে দুই মেরুর দ্বন্দ্বের অবসান হউক তা হয়তো নেতৃবৃন্দরাই চায় না।

আওয়ামীলীগের বর্ষিয়ান এক রাজনীতিবীদ বলেন, সিনিয়র নেতৃবৃন্দদের উচিত ছিলো দীর্ঘ এ সময়ে দুই মেরুসহ জেলা-মহানগরের সকল স্তরের নেতা-কর্মীদের মাঝে বিবাদমান বিরোধের অবসান করা। কিন্তু তারা না করে উল্টো সিনিয়র নেতারাই অনেক স্থানে নতুন করে বিরোধের সৃষ্টি করেছেন বলে তিনি মনে করেন। এক্ষেত্রে তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, সোনারগা থানা আওয়ামীলীগের কমিটি নিয়ে একটি গ্রুপের পক্ষে অবস্থান নিয়ে দৃশ্যতই নতুন বিরোধের সৃষ্টি করেছে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এর নেতৃত্বাধীন নেতৃবৃন্দরা।

তাছাড়া সর্বমহলে সেলিম ও শামীম ওসমানের গুরু এবং মেয়র আইভীর চাচা হিসাবে পরিচিত আনোয়ার হোসেনও ব্যর্থ হয়েছে বলে মনে করে মহানগর আওয়ামীলীগের এক নেতা। তার মতে, ক্লিন ইমেজের অধিকারী আনোয়ার হোসেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ার পর ঘোষণা দিয়েছিলেন দুই মেরুরু দ্বন্দের অবসান করবেন, কিন্তু কার্যত তিনি তা পারেন নি। তাই তাকেও অনেকাংশে ব্যর্থ বলা যায়, তবে তিনি নতুন করে কোনো দ্বন্দ বা বিরোধেরও সৃষ্টি করেন নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহলের মতে, সর্বোপরী দলীয় দ্বন্দ-কোন্দল নিরসন করতে না পারার ব্যর্থতার দ্বায় কাধে নিয়েই চলছে জেলা ও মহানগর আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দরা।

বাছাইকৃত সংবাদ

No posts found.