৮ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, মঙ্গলবার, সন্ধ্যা ৬:১৬

ত্রিভুজ প্রেমের দ্বন্দে হিজড়া ভাইয়ের হাতে বোন খুন

প্রাইমনারায়ণগঞ্জ.কম

প্রাইম প্রতিবেদকঃ

ছয় মাস পর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পাপিয়া (২০) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে দুই জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

রোববার ২২ নভেম্বর দুপুরে পিবিআই এর জেলা পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম সাইনবোর্ড এলাকায় তার কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। 

তিনি জানান, পিবিআই এর ক্রাইম সিনটিম অজ্ঞাত ওই যুবতীর আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে তার নাম পরিচয় উদঘাটন করে জানতে পারে তার নাম পাপিয়া বেগম(২০)। সে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুরের হলদিপুর এলাকার জয়নাল মিয়ার মেয়ে।

মামলাটি কিছুদিন আড়াইহাজার থানায় তদন্তাধীন থাকলে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশে মামলাটির তদন্ত ভার পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলার উপর অর্পিত হয়। এরপর গত ২৩শে জুলাই পিবিআই এই মামলার তদন্তে নামলে গত ১৮ নভেম্বর পিবিআইয়ের তদন্তকারী কর্মকর্তা মোঃ তৌহিদুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্সসহ ঘটনার সাথে জড়িত মোঃ আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। সে বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে।  

তিনি আরও জানান,  অভিযুক্ত মোঃ আরিফুল ইসলামের সাথে পাপিয়ার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এই সম্পর্ক তার ভাই সাম্মি (তৃতীয় লিঙ্গ) মেনে নিতে পারেনি। তার ভাই সাম্মি চাইতো ধৃত আরিফুল ইসলাম তার সাথে প্রেমের মাধ্যমে শারিরিক সম্পর্ক গড়ে তুলুক। কিন্তু এই বিষয় পাপিয়া জানতে পারলে দুই জনের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়।

ঘটনার দিন গত ২৭শে মে আরিফুল, পাপিয়া এবং তার ভাই সাম্মি সবাই পাপিয়ার ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিল। দুই জনের ঝগড়ার কারণে আরিফুল বাড়ী থেকে বের হয়ে যেতে চাইলে বৃষ্টির কারণে যেতে না পারায় তার পরিচিত একই বিল্ডিং এর ২য় তলায় জনৈক সামিয়ার বাড়ীতে অবস্থান করে।

কিছুক্ষণ পরে আরিফুল পাপিয়ার ঘরে এসে পাপিয়ার লাশ বিছানার উপর দেখতে পায়। এসময় ভিকটিমের গলায় ওড়না পেঁচানো ছিল এবং সাম্মি ঘর থেকে বের হয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল।

সাম্মি আরিফুলকে বলে , পাপয়িা বেঁচে আছে। পরে তারা একজন স্থানীয় ডাক্তারকে ডেকে এনে জানতে পারে পাপিয়া মারা গেছে। সাম্মির তার বাবা জয়নালকে পাপিয়ার মৃত্যুর খবর জানালে সে ঘটনাস্থলে আসে।

পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম জানান, পাপিয়ার বাবা জয়নালের পরিকল্পনা মোতাবেক আরিফুল ইসলাম, জয়নালের ছেলে সাম্মি মিলে পাপিয়ার লাশ গুম করতে ভৈরব ব্রীজ থেকে নদীতে ফেলে দিতে তারা একটি এ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে পাপিয়াকে এ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিয়ে রওয়ানা হয়। কিন্তু পথিমধ্যে পুলিশের চেক পোষ্ট থাকায় আড়াইহাজারের শিমুলতলায় রাস্তার পাশে জঙ্গলের ভিতরে তার লাশ ফেলে দিয়ে চলে যায়।  

তিনি জানান,অভিযুক্ত আরিফুল ইসলাম বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেছে যে, সাম্মি পাপিয়াকে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে পূর্বে গ্রেফতারকৃত পাপিয়ার বাবা জয়নাল মিয়াকে দুই দিনের পুলিশ রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে তার পরিকল্পনা মতেই সে তার সহযোগী আসামীরা ভিকটিমের লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে আড়াইহাজারের শিমুলতলা নামক স্থানে জঙ্গলের মধ্যে ফেলে গেছে। সেই সঙ্গে  গেল ২১শে নভেম্বর বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে জয়নাল।  মামলাটি পিবিআই, নারায়ণগঞ্জ জেলা কর্তৃক তদন্তাধীন রয়েছে।

বাছাইকৃত সংবাদ

No posts found.