
ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র দুই দিন। অথচ ভিড় ও ব্যস্ততা খুব একটা নেই ছুরি-বটি-চাপাতি বিক্রির দোকানগুলোতে। গত কয়েক দশকে এমন দৃশ্য দেখা না গেলেও এবারই প্রথম ঈদকে সামনে রেখে কর্মহীন সময় কাটাচ্ছেন এ পেশার লোকজন। অথচ প্রতিবছর ঈদের সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই চাপাতি ও ছুরি বিক্রি জমে উঠে। কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। ছুরি-বটির দোকানদাররা বলছেন, করোনার কারণে মার্চ থেকে বিয়ে-শাদি বন্ধ। কোরবানি দেবে এমন মানুষের সংখ্যাও এ বছর কম হবে। ফলে চরম মন্দা যাচ্ছে তাঁদের ব্যবসায়।
কামারের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রির অন্যতম হলো স্থান হলো নগরীর ১নং রেল গেইট এলাকা। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, কোরবারনীর পশু জবাইয়ের এসব জিনিসপত্রের প্রতিটি দোকানে সাজিয়ে রাখা হয়েছে ছুরি, বঁটি, দা, চাপাতি, কুড়ালসহ ধারালো সব জিনিসপত্র। দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে দেখা যায় কিছু সময় পর পর দু-একজন ক্রেতা আসছেন, কেউ দাম জেনে চলে যাচ্ছেন, আবার কেউ অল্প পরিসরে কোরবানির সরঞ্জাম কিনে নিচ্ছেন। একজন ক্রেতা আসতেই দোকানিরা ডাকাডাকি শুরু করে দিচ্ছেন। মাংস কাটার সরঞ্জাম বিক্রির ধরন দেখেই অনুমান করা যাচ্ছে, এ বছর পশু কোরবানির সংখ্যা অনেক কম হবে।
দোকানদাররা বলেন, কর্মচারীদের বেতন, নিজের সংসারসহ আনুষঙ্গিক খরচ দিয়ে সারা বছরই লোকসানে থাকতে হয়। এ লোকসান কাটিয়ে উঠতে কোরবানির ঈদের অপেক্ষায় থাকি। কোরবানির আগের মাস থেকেই আমাদের ব্যবসা চাঙ্গা হতো। কিন্তু এ বছর সেই আশায় গুড়েবালি। প্রতিদিন সামান্য কয়েকটি দা-ছুরি বিক্রি করতে পারছি, আগের মতো বেচা-বিক্রি নেই, ক্রেতাও নেই।
১নং রেল গেইট এলাকার দোকানদার মোহাম্মদ আলী, আবির, আকাশ প্রাইম নারায়ণগঞ্জকে বলেন, ‘কোরবানির পশু জবাই থেকে শুরু করে মাংস প্রস্তুত করাসহ সব ধরনের সরঞ্জাম সাজিয়ে রেখেছি আমরা, কিন্তু ক্রেতা নেই। গত বছর ঈদের ১৫ দিন আগ থেকেই বিক্রি শুরু হয়েছিল। এ বছর ক্রেতাদের আনাগোনা নেই। কোরবানিদাতারা পশু কেনার আগেই গোশত কাটার সরঞ্জাম কিনে নেন।
এ এলাকার দোকানগুলোতে সাজিয়ে রাখা পশু জবাইয়ের বড় ছুরির দাম ৭০০ থেকে এক হাজার টাকা। মাঝারি ছুরির দাম ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। পাগলু ছুরির দাম ২০০ থেকে ৪৫০ টাকা। ছিলা ছুরির দাম ৫০ থেকে ১৫০ টাকা। হাড় কাটার চায়নিজ কুড়াল ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। দেশি কুড়াল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। চাপাতি ও বড় বঁটি কেজি হিসেবে বিক্রি হয়ে থাকে। প্রতি কেজি ওজনের চাপাতির দাম ৫৫০ থেকে ৭০০ টাকা। বড় বঁটি প্রতি কেজি ওজনের দাম ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। তবে ছোট বঁটি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পিস।
No posts found.