
শহরতলীর মৃত মুসলিম ব্যক্তিদের দাফন করার একমাত্র স্থান হচ্ছে পাইকপাড়া কবরস্থান।শহরতলীর প্রায় ২০-২৫ গ্রামের মানুষদের মৃত্যুর পর এখানেই দাফন করা হয়। সেই কবরস্থানে মৃত ব্যক্তিদের দাফন ও কবর জিয়ারতে এসে অজু করতে ও প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অজুখানা বন্ধ থাকায় জনসাধারণকে এ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে কাউন্সিলরদের বক্তব্য হচ্ছে, নিরাপত্তার কারণে খোলা যাচ্ছে না অজুখানা। তবে এলাকাবাসীর দাবী কাউন্সিলরদের ব্যর্থতার কারণেই খোলা হচ্ছে না এ অজুখানা।
জানা যায়, প্রায় বছর দুয়েক আগে নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ডের পাইকপাড়া কবরস্থানের পাশেই নির্মিত হয়েছে আধুনিক অজুখানা, তবে এখনো হয়নি উদ্বোধন বা খুলে দেয়া হয়নি সাধারণ জনগনের সুবিধার্থে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে কবরস্থানে আসা মুসল্লী ও স্থানীয়দের।
আরও জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ৫টি ওয়ার্ডের মৃত্যুবরণকারীদের মৃতদেহ কবর দেয়ার একমাত্র স্থান হচ্ছে ১৭ নং ওয়ার্ডের পাইকপাড়া কবরস্থানটি। ১৪, ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ নং ওয়ার্ডের উকিল পাড়া, পালপাড়া, ২নং রেল গেইট, ১ নং রেল গেইট, নিতাইগঞ্জ, মন্ডলপাড়া, সৈয়দপুর, শীতলক্ষ্যা, পাইকপাড়া, জিমখানা, দেওভোগ আখড়া, পাক্কা রোড, ১নং বাবুরাইল, ২নং বাবুরাইলসহ প্রায় ২০ এলাকার বাসিন্দাদের মৃতদেহ এ কবরস্থানেই দাফন করা হয়। ফলে প্রায় প্রতিদিনই মৃত ব্যক্তিদের স্বজনরা এ কবরস্থানে এসে স্বজনদের কবর জিয়ারত ও দোয়া করেন। এছাড়া শুক্রবার দিন জুম্মার নামাজের পর কয়েক হাজার মানুষ এ কবরস্থানটি জিয়ারত করতে আসেন বলে জানা যায়।
মুসল্লীরা জানায়, এই পাইকপাড়া কবরস্থানের ভিতরে অনেক পুরোনো একটি অজুখানা ও পাবলিক টয়লেট ছিলো। বেশ পুরোনা হওয়ায় নানা সমস্যার সম্মুখীন হলেও কষ্ট করে অজু করতে হতো, তবে জরাজীর্ণ হওয়ায় কবরস্থানের টয়লেটটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিলো। ফলে কবরস্থানে আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত করতে এসে অজু করতে গিয়ে বা প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তো মুসল্লীরা।
এ সমস্যার বিষয়ে জানা যায়, প্রায় বছর দুয়েক আগে এসব সমস্যার সমাধান করার লক্ষ্যে কবরস্থানের বাইরে নির্মাণ করা হয় আধুনিক অজুখানা ও পাবলিক টয়লেট। তবে দুই বছর আগে নির্মাণ হলেও উদ্বোধন না করায় বা খুলে না দেয়ায় জনগন এ অজুখানা ও টয়লেটের সুবিধা ভোগ করতে পারে নি এখনো। উপরন্তু কবরস্থানের ভিতরে পুরোনো যে অজুখানা ও ব্যবহারের অনুপযোগী টয়লেট ছিলো তাও ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে সংস্কার কাজের জন্য। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জনসাধারণকে।
স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, দুই বছর আগে এটি নির্মাণ করা হলেও এখনো খুলে দেয়া হয় নি। ফলে পানির কল ও টয়লেটগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া কবর জিয়ারত করতে আসা মুসল্লীরাও অজু করতে গিয়ে বিপাকে পড়ছে। তারা আরও জানায়, জনপ্রতিনিধিরা যদি অজুখানাটি খুলে না দেয় তাহলে এ সমস্যার সমাধান করবে কে?
প্যানেল মেয়র-১ বিভা হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিরর আব্দুল করিম বাবু ভালো বলতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু বলেন, এ অজুখানা ও টয়লেটটি তিন মাস পূর্বেই একটি দুষ্টচক্র এর ভেতরের পানির কল ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি চুরি করে নিয়ে গেছে। এছাড়া মাদক ব্যবসায়ীরা এখানে বসে মাদক সেবন করে বলেও জানা গেছে। তাই এটির রক্ষনাবেক্ষনের অভাবে ও যন্ত্রপাতি যাতে চুরি না হয় এজন্য খুলে দেয়া যাচ্ছে না।
জনপ্রতিনিধি হয়ে যদি আপনারা অজুখানাটি খুলে দিতে বা এর সংরক্ষণ করতে না পারেন তাহলে জনগনের সমস্যার সমাধান করবে কে এমন প্রশ্নে এ কাউন্সিলর বলেন, আমি সবসময় জনগনের জন্যই কাজ করি। জনগনরর কথা ভেবেই অজুখাসা ও টয়লেট নির্মাণ করে দিয়েছি। এখন এটি রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্ব এলাকাবাসীরই। আমরা কাউন্সিলররা তো আর পাহারা দিতে পারি না। তারপরও মুসল্লীদের স্বার্থে শীঘ্রই এটি খুলে দেয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলেও জানান তিনি।
প্রাইম/ এস আই এস
No posts found.